আর আমরা ধ্বংস করেছিলাম কারূন, ফিরআউন ও হামানকে। আর অবশ্যই মূসা তাদের কাছে সুস্পষ্ট নিদর্শনসহ এসেছিল; অতঃপর তারা যমীনে অহংকার করেছিল; কিন্তু তারা আমার শাস্তি এড়াতে পারেনি।
সুতরাং তাদের প্রত্যেককেই আমরা তার অপরাধের জন্য পাকড়াও করেছিলাম। তাদের কারো উপর আমরা পাঠিয়েছিলাম পাথরকুচিসম্পন্ন প্রচণ্ড ঝটিকা [১], তাদের কাউকে আঘাত করেছিল মহানাদ, কাউকে আমরা প্রোথিত করেছিলাম ভূগর্ভে এবং কাউকে আমরা করেছিলাম নিমজ্জিত। আর আল্লাহ এমন নন যে, তিনি তাদের প্রতি যুলুম করবেন; বরং তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি জুলুম করেছিল।
[১] অর্থাৎ আদ জাতির। তাদের উপর অবিরাম সাত রাত ও আট দিন পর্যন্ত ভয়াবহ তুফান চলতে থাকে। [সূরা আল-হাক্কাহ ৭]
যারা আল্লাহ ছাড়া বহু অভিভাবক গ্রহণ করে, তাদের দৃষ্টান্ত মাকড়সার ন্যায় [১], যে ঘর বানায়। আর ঘরের মধ্যে মাকড়সার ঘরই তো দু্র্বলতম, যদি তারা জানত [২]।
[১] মাকড়সাকে “আনকাবূত” বলা হয়। এখানে সে মাকড়সা বোঝানো হয়েছে, যে জাল তৈরী করে এবং তাতে বুলতে থাকে। এই জালের সাহায্যে সে মশা-মাছি শিকার করে। বলাবাহুল্য, জন্তু জানোয়ারের যত প্রকার বাসা ও ঘর বিদিত আছে, তন্মধ্যে মাকড়সার জাল দুর্বলতর, যা সামান্য বাতাসেও ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। আলোচ্য আয়াতে বলা হয়েছে যে, যারা আল্লাহ ব্যতীত অন্যের ইবাদত করে এবং অন্যের উপর ভরসা করে, তাদের দৃষ্টান্ত মাকড়সার জাল, যা অত্যন্ত দুর্বল। এমনিভাবে যারা কোনো প্রতিমা অথবা কোনো মানুষের উপর ভরসা করে, তাদের ভরসা এমন, যেমন মাকড়সা তার জলের উপর ভরসা করে। [ইবন কাসীর] বিশ্ব-জাহানের প্রকৃত মালিককে বাদ দিয়ে যারা একেবারে অক্ষম বান্দা ও সম্পূর্ণ কাল্পনিক উপাস্যদের ওপর নির্ভর করে চলছে তার প্রকৃত অবস্থা মাকড়শার জালের চেয়ে বেশী কিছু নয়। মাকড়শার জাল যেমন আঙ্গুলের সামান্য একটি টোকাও বরদাশ্ত করতে পারে না, তেমনি তোমাদের আশার অট্টালিকাও আল্লাহর ব্যবস্থার সাথে প্রথম সংঘাতেই চূৰ্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবে। সামান্য বৃষ্টিও যার সবকিছু বিনষ্ট করে দেয়, তোমাদের সামান্যতম উপকারও তারা করতে পারে না। [দেখুন, ফাতহুল কাদীর] সুতরাং সত্য কেবল এই যে, একমাত্র রাব্বুল আলামীন ছাড়া আর কারও উপর নির্ভর করা যায় না। আল্লাহ বলেন: “যে ব্যক্তি তাগুতকে (আল্লাহ বিরোধী শক্তিকে) অস্বীকার ও প্রত্যাখ্যান করে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে সে এমন মজবুত নির্ভরকে আঁকড়ে ধরেছে যা কখনো ছিন্ন হওয়ার নয়। বস্তুত আল্লাহ সবকিছু শোনেন ও জানেন।" [সূরা আল-বাকারাহ ২৫৬]
[২] এর দুটি অর্থ হয়। এক. যদি তারা জানত যে তাদের মা’বুদগুলো মাকড়শার জালের মত, তবে এ ধরনের মা’বুদের পিছনে কখনও থাকত না। দুই. যদি তাদের কোনো জ্ঞান থাকত, তবে তারা জানত যে, আল্লাহ্ তাদের মা’বুদদের অবস্থা খুব ভাল করেই জানেন। [ফাতহুল কাদীর]
তারা আল্লাহ্ ছাড়া যা কিছুকে ডাকে, আল্লাহ্ তো তা জানেন। আর তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় [১]।
[১] অর্থাৎ যেসব জিনিসকে এরা মা’বুদে পরিণত করেছে এবং যাদেরকে সাহায্যের জন্য আহবান করে তাদের প্রকৃত স্বরূপ আল্লাহ ভালোভাবেই জানেন। তাদের কোনো ক্ষমতাই নেই। একমাত্র আল্লাহই ক্ষমতার মালিক এবং তাঁরই বিচক্ষণ কর্মকুশলতা ও জ্ঞান এ বিশ্ব-জাহানের ব্যবস্থা পরিচালনা করছে। এ আয়াতের আর একটি অনুবাদ এও হতে পারে, আল্লাহ খুব ভালোভাবেই জানেন, তাঁকে বাদ দিয়ে এরা যাদেরকে ডাকে তারা কিছুই নয় (অর্থাৎ ভিত্তিহীন ও ক্ষমতাহীন) এবং একমাত্র তিনিই পরাক্রান্ত ও জ্ঞানের অধিকারী। সুতরাং অচিরেই তিনি তাদেরকে তাদের কর্মকাণ্ডের শাস্তি দিবেন। [দেখুন, ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর]
আর এ সকল দৃষ্টান্ত আমরা মানুষের জন্য দেই; কিন্তু শুধু জ্ঞানী ব্যক্তিরাই এটা বুঝে [১]।
[১] মাকড়সার জাল দ্বারা মুশরিকদের উপাস্যদের দৃষ্টান্ত দেয়ার পর এখন বলা হয়েছে যে, আমি সুস্পষ্ট দৃষ্টান্ত দ্বারা তাওহীদের স্বরূপ বর্ণনা করি; কিন্তু এসব দৃষ্টান্ত থেকেও কেবল আলেমগণই জ্ঞান আহরণ করে। অন্যরা চিন্তা-ভাবনাই করে না। ফলে সত্য তাদের সামনে ফোটে না। মূলতঃ কুরআন ও হাদীসের কিছু শব্দ বুঝে নিলে কেউ আল্লাহর কাছে আলেম হয় না, যে পর্যন্ত কুরআন নিয়ে চিন্তা-ভাবনার অভ্যাস গড়ে না তোলে এবং যে পর্যন্ত সে কুরআন অনুযায়ী আমল না করে। আমর ইবন আস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছ থেকে এক হাজার দৃষ্টান্ত শিক্ষা করেছি। [মুসনাদে আহমাদ ৪/২০৩] এটা নিঃসন্দেহে আমর ইবন আস রাদিয়াল্লাহু আনহুর একটি বিরাট শ্রেষ্ঠত্ব। কেননা আল্লাহ্ তা'আলা এই আয়াতে তাদেরকেই আলেম বলেছেন, যারা আল্লাহ্ ও রাসূল বর্ণিত দৃষ্টান্তসমূহ বোঝে। আমর ইবন মুররা বলেন, আমি যখন এমন কোনো আয়াতে পৌঁছি, যা আমার বোধগম্য নয়, তখন মনে খুব দুঃখ পাই। কেননা আল্লাহ্ বলেন: “এ সকল উদাহরণ আমি মানুষের জন্য দেই, কিন্তু জ্ঞানীরাই তা বোঝে।” [ইবন কাসীর]
আল্লাহ্ যথাযথভাবে আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন [১]; এতে তো অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে মুমিনদের জন্য।
[১] অর্থাৎ আল্লাহ্ আসমান ও যমীন যথাযথই সৃষ্টি করেছেন। তিনি কোনো খেলাচ্ছলে তা সৃষ্টি করেন নি। [ইবন কাসীর] তিনি আসমান ও যমীন ইনসাফ ও আদলের উপর প্রতিষ্ঠিত করেছেন অথবা আয়াতের অর্থ, তিনি আসমান ও যমীন তার কালেমা ও নির্দেশ দ্বারা সৃষ্টি করেছেন অথবা আয়াতের অর্থ, তিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন, যখন সেটা সৃষ্টি করা ছিল যথাযথ। [ফাতহুল কাদীর]
আপনি [১] তেলাওয়াত করুন কিতাব থেকে যা আপনার প্রতি ওহী করা হয় [২] এবং সালাত কায়েম করুন [৩]। নিশ্চয় সালাত বিরত রাখে অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে [৪]। আর আল্লাহর স্মরণই তো সর্বশ্রেষ্ঠ [৫]। তোমরা যা কর আল্লাহ্ তা জানেন।
[১] আপাত দৃষ্টিতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করা হয়েছে, কিন্তু আসলে সমস্ত মুসলিমদেরকেই উদ্দেশ্য করা হয়েছে। এতে দুটি অংশ আছে, কুরআন তেলাওয়াত ও সালাত কায়েম করা। কারণ, এ দু'টি জিনিসই মুমিনকে এমন সুগঠিত চরিত্র ও উন্নতর যোগ্যতার অধিকারী করে যার সাহায্যে সে বাতিলের প্রবল বন্যা এবং দুস্কৃতির ভয়াবহ ঝঞ্ঝার মোকাবিলায় সঠিক পথে থাকতে পারে। [দেখুন, আত-তাহরীর ওয়াত তানওয়ীর]
[২] কুরআন তেলাওয়াতের এ শক্তি মানুষ তখনই অর্জন করতে পারে যখন সে কুরআনের শুধুমাত্র শব্দগুলো পাঠ করেই ক্ষান্ত হয় না। বরং তার শিক্ষাগুলোও সঠিকভাবে অনুধাবন করে হৃদয়ের প্রতিটি তন্ত্রীতে সেগুলোকে সঞ্চারিত করে যেতে থাকে। আসলে যে তেলাওয়াতের পরে মানুষের মন-মানস, চিন্তা-চেতনা ও চরিত্র-কর্মনীতিতে কোনো পরিবর্তন আসে না বরং কুরআন পড়ার পরও কুরআন যা নিষেধ করে মানুষ তা সব করে যেতে থাকে তা একজন মুমিনের কুরআন তেলাওয়াত হতেই পারে না। মূলতঃ কুরআনের হারামকৃত জিনিসকে যে হালাল করে নিয়েছে যে কুরআনের প্রতি ঈমানই আনেনি। এ অবস্থাটিকে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি ছোট্ট বাক্যের মধ্য দিয়ে অত্যন্ত চমৎকারভাবে সুস্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন: “কুরআন তোমার পক্ষে বা বিপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ।” [মুসলিম ২২৩]
[৩] কুরআন তেলাওয়াতের পর দ্বিতীয় যে কাজটির প্রতি উম্মতকে অনুবর্তী করার নির্দেশ এখানে দেয়া হয়েছে তা হলো, সালাত। সালাতকে অন্যান্য ফরয কর্ম থেকে পৃথক করার এই রহস্যও বর্ণিত হয়েছে যে, সালাত স্বকীয়ভাবেও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং দীনের স্তম্ভ। এর উপকারিতা এই যে, যে ব্যক্তি সালাত কায়েম করে, সালাত তাকে অশ্লীল ও গৰ্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে। [ইবন কাসীর] আয়াতে ব্যবহৃত “ফাহ্শা’ শব্দের অর্থ এমন সুস্পষ্ট মন্দ কাজ, যাকে প্রত্যেক বুদ্ধিমান ব্যক্তিই মন্দ মনে করে; যেমন ব্যভিচার, অন্যায় হত্যা, চুরি, ডাকাতি ইত্যাদি। পক্ষান্তরে ‘মুনকার’ এমন কথা ও কাজকে বলা হয়, যার হারাম ও অবৈধ হওয়ার ব্যাপারে শরীআত বিশারদগণ একমত ৷ [বাগভী; ফাতহুল কাদীর] ‘ফাহ্শা’ ও ‘মুনকার’ শব্দদ্বয়ের মধ্যে যাবতীয় অপরাধ এবং প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য গোনাহ দাখিল হয়ে গেছে। যেগুলো স্বয়ং নিঃসন্দেহরূপে মন্দ এবং সৎকর্মের পথে সর্ববৃহৎ বাধা। সালাতের মাধ্যমে এ সকল বাধা দূরীভূত হয়।
[৪] এখানে কেউ কেউ সন্দেহ করে যে, অনেক মানুষকে সালাতের আনুবর্তী হওয়া সত্ত্বেও বড় বড় গুনাহে লিপ্ত থাকতে দেখা যায়। এটা আলোচ্য আয়াতের পরিপন্থী নয় কি? এর কয়েকটি জওয়াব দেয়া হয়। এক. প্রকৃত সালাত আদায়কারীকে সালাত অবশ্যই অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে দূরে রাখবে। হাসান ও কাতাদাহ বলেন, যার সালাত তাকে অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে দূরে রাখল না সে সালাত দ্বারা আল্লাহ থেকে দূরেই রয়ে গেল! [তাবারী] দুই. ইবন কাসীর বলেন, এর অর্থ যারা নিয়মিত সালাত আদায় করবে, তাদের এ অবস্থাটি তৈরী হবে। হাদীসে এসেছে, এক লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল, অমুক লোক রাতে সালাত আদায় করে, আর সকাল হলে চুরি করে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, অচিরেই তার সালাত তাকে তা থেকে নিষেধ করবে। [মুসনাদে আহমাদ ২/৪৪৭]
[৫] অর্থাৎ আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। এর কয়েকটি অর্থ হতে পারে। এক. আল্লাহ্র যিকির সবচেয়ে বড় ইবাদাত। সালাত বড় ইবাদাত হবার কারণ হচ্ছে, এতে আল্লাহর যিকির থাকে। সুতরাং যে সালাতে যিকির বেশী সে সালাত বেশী উত্তম। [ইবন কাসীর; মুয়াসসার] দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ্র স্মরণ অনেক বড় জিনিস, সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ। মানুষের কোনো কাজ এর চেয়ে বেশী বড় নয়। [তাবারী] এর তৃতীয় অর্থ হচ্ছে, তোমার আল্লাহ্কে স্মরণ করার চেয়ে আল্লাহ কর্তৃক তোমাকে স্মরণ করা অনেক বেশী বড় জিনিস। [তাবারী] কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন, “তোমরা আমাকে স্মরণ করো আমি তোমাদের স্মরণ করবো।” [সূরা আল-বাকারাহ ১৫২] কাজেই বান্দা যখন সালাতে আল্লাহকে স্মরণ করবে তখন অবশ্যই আল্লাহও তাকে স্মরণ করবেন। আর বান্দার আল্লাহকে স্মরণ করার তুলনায় আল্লাহর বান্দাকে স্মরণ করা অনেক বেশী উচ্চমানের। বান্দা যখন আল্লাহকে স্মরণ করে, তখন আল্লাহ ওয়াদা অনুযায়ী স্মরণকারী বান্দাকে ফেরেশতাদের সমাবেশেও স্মরণ করেন। আল্লাহর এ স্মরণ ইবাদতকারী বান্দার সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত। এ স্থলে অনেক সাহাবী ও তাবেয়ী থেকে এই অর্থই বর্ণিত আছে। এই অর্থের দিক দিয়ে এতে এদিকেও ইঙ্গিত আছে যে, সালাত পড়ার মধ্যে গোনাহ থেকে মুক্তির আসল কারণ হল আল্লাহ্ স্বয়ং সালাত আদায়কারীর দিকে অভিনিবেশ করেন এবং ফেরেশতাদের সমাবেশে তাকে স্মরণ করেন। [দেখুন, বাগভী]
Contents of the translations can be downloaded and re-published, with the following terms and conditions:
1. No modification, addition, or deletion of the content.
2. Clearly referring to the publisher and the source (QuranEnc.com).
3. Mentioning the version number when re-publishing the translation.
4. Keeping the transcript information inside the document.
5. Notifying the source (QuranEnc.com) of any note on the translation.
6. Updating the translation according to the latest version issued from the source (QuranEnc.com).
7. Inappropriate advertisements must not be included when displaying translations of the meanings of the Noble Quran.
លទ្ធផលស្វែងរក:
API specs
Endpoints:
Sura translation
GET / https://quranenc.com/api/v1/translation/sura/{translation_key}/{sura_number} description: get the specified translation (by its translation_key) for the speicified sura (by its number)
Parameters: translation_key: (the key of the currently selected translation) sura_number: [1-114] (Sura number in the mosshaf which should be between 1 and 114)
Returns:
json object containing array of objects, each object contains the "sura", "aya", "translation" and "footnotes".
GET / https://quranenc.com/api/v1/translation/aya/{translation_key}/{sura_number}/{aya_number} description: get the specified translation (by its translation_key) for the speicified aya (by its number sura_number and aya_number)
Parameters: translation_key: (the key of the currently selected translation) sura_number: [1-114] (Sura number in the mosshaf which should be between 1 and 114) aya_number: [1-...] (Aya number in the sura)
Returns:
json object containing the "sura", "aya", "translation" and "footnotes".